প্লিজ এবার একটু ছেড়ে দেন আমাকে: পরীমণি
ঢালিউডের আলোচিত-সমালোচিত অভিনেত্রী পরীমণি। অনেকেই বলে থাকেন, তিনি যতোটুকু কাজ করেছেন তার চেয়ে ঢের লাইমলাইট পেয়েছেন। এবার পরী নিজেই তা স্বীকার করলেন! এমনকি তার কাজের চেয়ে যে ব্যক্তিজীবন নিয়েই বেশি চর্চা হয় সেটিও তিনি জানেন ও মানেন। সে কথাগুলোই আজ ফেসবুকে জানিয়েছেন পরীমণি।
তিনি আজ নিজের সঙ্গে নিজেরই কিছু কথোপকথন লেখার মাধ্যমে তুলে ধরেছেন ফেসবুকে।
এই নায়িকা লিখেছেন, ‘আজ কোনো এক কারণে নিজেকে নিজের মতো করে অনেকগুলো প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করলো আমার। নিজের সাথে কথোপকথন হলো খুব। নিজেকে আক্রমণাত্মক প্রশ্ন করলাম সবগুলোই। যেমন-
১. পরী, আপনি কর্ম জীবনে কি এমন কাজ করেছেন বলে মনে করেন যার জন্য সাধারণ জনগণের আপনাকে নিয়ে এত মাতামাতি? বা পাশাপাশি গণমাধ্যমে আপনাকে নিয়ে এতো সম্প্রচার কেন হয় বলে মনে করেন?
২. আপনার কাজের থেকে লোকে আপনার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কথা বলতে কেন পছন্দ করে?
৩. আপনার আগের জেনারেশনের থেকেও যদি আরো একটু আগে চলে যাই, যেমন- শাবানা, ববিতা, কবরী, রজিনা’দের আমলে কি তারা তাদের কাজ নিয়ে যতটা ফোকাসে থাকতেন ততটা কি তাদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে ফোকাসে থাকতেন?’
এই প্রশ্নগুলো করেই আপাতত নিজেকে থামালেন পরীমণি। হয়তো এর চেয়ে বেশি ‘রিয়েলিটি চেক’ মানতে পারছিলেন না তিনি। তাই নিজেকে আর প্রশ্ন না করে তিনি সমাজের প্রতি একটি বিশেষ অনুরোধ করেছেন। পরী লিখেছেন, ‘জীবন কখনও কখনও নিজের কর্ম কিংবা অবস্থানের থেকে খুব বেশি জরুরী হয়ে পড়ে। প্রত্যেকটা জীবনের অধিকার আছে সুন্দর করে বেঁচে থাকার। আমার প্রথম অনুরোধ, প্লিজ এবার একটু ছেড়ে দেন আমাকে। আমার কাজের বাইরে আমার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আর টানাটানি কইরেন না আল্লার ওয়াস্তে! বিশ্বাস করেন, এখানে আমার জীবনটাই অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ এখন।’
কেন তিনি এমন অনুরোধ করছেন সে কথাও জানালেন এই নায়িকা, ‘আমার সাকসেসফুল ক্যারিয়ারের থেকেও জরুরী আমার সুস্থ জীবন যাপনের। কারণ আমার বাচ্চাদের আমি একটা সুন্দর সুস্থ জীবন দিতে চাই। আমি আমার বাচ্চাদের মা/ একমাত্র অভিভাবক হয়ে আমি তার সর্বোচ্চটা দিতে চাই। যেমন করে হয়তো সব মায়েরাই চায়! গত তিন-চারটা মাস আমার জীবনের সবথেকে কঠিন সময় পার করেছি আমি। কেন / কি জন্যে সেটার ডেসক্রিপশনটা দেয়ার প্রয়োজন নেই বলে ধরে নিচ্ছি।’
সবশেষে তিনি লেখেন, ‘আমি নায়িকা, আমি মেয়ে, সব কিছু ছাড়িয়ে আমি মানুষ। আমি এই পৃথিবীর সমস্ত মানুষের কাছে প্রার্থনা করছি- হে মানুষ, হে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ প্রাণ, তোমরা আমার উপর এবার একটু রহম কর। আগে আমি সুন্দর করে একটু বাঁচি তারপর এমন হাজারো প্রশ্নের উত্তর দেবো।’
কিন্তু দু’দিনের মধ্যে পরীর মানসিকতার এতো পরিবর্তণ কিভাবে বা কেন এলো তা বোধগম্য নয়। কারণ, এ সপ্তাহেই তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর ভক্ত বিশেষ করে সাংবাদিকদের উদ্বিগ্ন হয়ে পড়াটাকে তিনি আদালত প্রাঙ্গণেই দারুণভাবে সমর্থন করেন। এমনকি তিনি এও বলেন, ‘একদম শুরু থেকেই আপনারা যেভাবে আমাকে সাপোর্ট করেছেন, যতটা পেরেশানিতে ছিলেন, তা দেখে আমার নিজের যত দুঃখ ছিল, সেটা ঘুচে গেছে।’