এবার বন্যার পানি লক্ষ্মীপুরে, ডুবছে বিভিন্ন এলাকা
বন্যা পরিস্থিতিদেশের পূর্বাঞ্চলে আকস্মিক বন্যায় কুমিল্লা, ফেনী জেলার পর এবার বন্যার পানি ঢুকছে লক্ষ্মীপুরে। বিগত দিনগুলোতে বৃষ্টি পানেতে জলাবদ্ধ থাকলেও এবার বিভিন্ন এলাকা বন্যার পানিতে ডুবে যাচ্ছে।
শনিবার (২৪ আগস্ট) বিকেলে থেকে এ পানির চাপ বেড়ে গেছে। গত কয়েকদিনের টানা ভারি বর্ষণে লক্ষ্মীপুরে জলবদ্ধতায় পানিবন্দী হয়ে আছে প্রায় সাড়ে ৬ লাখ মানুষ। এরমধ্যে জেলা শহরসহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ইউনিয়নগুলোতে পানি কমতেও শুরু করেছিল। কিন্তু শনিবার থেকে পার্শ্ববর্তী নোয়াখালীর বন্যার পানি রহমতখালীসহ খালসহ বিভিন্নভাবে ঢুকছে লক্ষ্মীপুরে। এতে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার কয়েকটি ওয়ার্ড ও পূর্বাঞ্চলের ইউনিয়নগুলোর অধিকাংশ এলাকার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নোয়াখালীর পানির চাপে চন্দ্রগঞ্জ, চরশাহী, দিঘলী,হাজীরপাড়া, দত্তপাড়া, মান্দারী, কুশাখালী, তেওয়ারীগঞ্জসহ কয়েকটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় ভারি বর্ষণের পানি সঙ্গে যোগ হচ্ছে নোয়াখালী থেকে আসা পানি। অনেক এলাকায় কোমর সমান পানি রয়েছে। ঘর-বাড়ির ভিতরেও পানি। লক্ষ্মীপুর সদরের রহমতখালী খাল, রামগতি, কমলনগরের ভুলুয়া নদী, রামগঞ্জের ওয়াপদা, বিরেন্দ্র খাল, রায়পুরের ডাকাতিয়া নদীসহ বিভিন্নস্থানে নদী-খাল দখল করে মাছ চাষ, সেতু-কালভার্ট-রাস্তা, দোকানপাটসহ স্থাপনা নির্মাণ করার কারণে ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
চরশাহী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম রাজু বলেন, আমার ইউনিয়নের পাশেই নোয়াখালী। এতে সেখানকার পানির চাপ আমার এলাকায় এসেছে। ঘরবাড়ি-রাস্তাঘাটে এখন ২-৪ ফুট পানি। এতে সাইক্লোন সেল্টারসহ ১৬টি স্থানে কিছু লোক আশ্রয় নিয়েছেন। তাদেরকে সরকারি-বেসরকারিভাবে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছেন, ভারী বর্ষণ ও জোয়ারের কারণে এখন পর্যন্ত লক্ষ্মীপুর জেলায় ৬ লাখ ৫৭ হাজার মানুষ পানিবন্দী। ইতোমেধ্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩৯৫ মেট্টিক টন চাল ও ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। লক্ষ্মীপুরে পানিবন্দী মানুষের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য স্থায়ী ও অস্থায়ী ১৮৯টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তত করা হয়েছে। এরমধ্যে কয়েকটি সাইক্লোন শেল্টারে মানুষজন আশ্রয় নিয়েছে।
লক্ষ্মীপুর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জেপি দেওয়ান বলেন, নোয়াখালীর পানির চাপ লক্ষ্মীপুরে আসছে। এতে কিছু পানি বাড়ছে। তবে বৃষ্টি না থাকায় রায়পুর ও রামগঞ্জে পানি কমতেছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে আগামি দুইদিনের মধ্যে পানি নেমে যাওয়ার আশা করা হচ্ছে।