চট্টগ্রামের নগরীর সড়কে ২০২১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ৩৬২টি ক্র্যাশে ২৯৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। সড়কে মৃত্যুর এই মিছিল বন্ধ করতে যানবাহনের গতিসীমা নিয়ন্ত্রণের বিকল্প নেই। এজন্য জরুরি ভিত্তিতে বিআরটিএর জারি করা যানবাহনের গতিসীমা নির্দেশিকা-২০২৪ বাস্তবায়ন করা দরকার।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) ‘ওয়ার্ল্ড ডে অফ রিমেমব্রান্স ফর রোড ট্রাফিক ভিকটিমস’ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত গোলটেবিল সংলাপ ও চট্টগ্রাম শহর রোড সেফটি রিপোর্ট ২০২১-২৩ প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিস ইনিশিয়েটিভ ফর গ্লোবাল রোড সেফটি (বিআইজিআরএস) ও আন্তর্জাতিক সংস্থা ভাইটাল স্ট্রাটেজিস-এর সহায়তায় নগর ভবন কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতদের স্মরণে প্রতিবছর নভেম্বর মাসের তৃতীয় রোববার বিশ্বজুড়ে দিবসটি পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, নগরীতে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য একটি প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বে সব প্রতিষ্ঠানের কাজ করা জরুরি। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান হিসেবে সিটি করপোরেশনের সাথে পুলিশ, বিআরটিএ, সিডিএ সবাই একটি সমন্বিত পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করলে সহজেই সড়কে শৃঙ্খলা আনা যাবে।
সংলাপে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আসফিকুজ্জামান আক্তার বলেন, সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে সড়কে চালকদের প্রতিযোগিতা বন্ধ করতে হবে।
নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)-এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, সড়কে বিশৃঙ্খলা বন্ধ করতে হলে ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলোকে একটি ব্যবস্থাপনার মধ্যে আনতে হবে। চালকদের প্রশিক্ষণ ও লাইসেন্সের আওতায় আনতে হবে। সেইসাথে শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থাকে ডিজিটাল করার বিকল্প নেই।
অন্যদিকে পথচারীদের জন্য জেব্রা ক্রসিং ও আন্ডারপাস তৈরি করার জন্য চসিক মেয়রকে অনুরোধ জানান তিনি।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন- চসিকের প্রধান প্রকৌশলী আবুল কাশেম। ভাইটাল স্ট্রাটেজিসের কারিগরি পরামর্শক আমিনুল ইসলাম রোড ক্র্যাশ প্রতিরোধে যানবাহনের গতিসীমা নির্দেশিকা বাস্তবায়নের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে রোড ক্র্যাশের অন্যতম কারণ যানবাজনের অতিরিক্ত গতি। তাই বিআরটিএ ‘যানবাহনের গতিসীমা নির্দেশিকা ২০২৪’ জারি করেছে। চসিক এই নির্দেশিকাটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে চট্টগ্রামের সড়কগুলোকে নিরাপদ করে তুলতে পারেন।
এরপর বিআইজিআরএস চট্টগ্রামের সার্ভেইল্যান্স কোঅর্ডিনেটর কাজী সাইফুন নেওয়াজ চট্টগ্রাম রোড সেফটি রিপোর্ট ২০২১-২৩ এর সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম এবং সঞ্চালনা করেন বিআইজিআরএস চট্টগ্রামের সমন্বয়কারী লাবিব তাজওয়ান উৎসব।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- সিএমপি’র উপ-পুলিশ কমিশনার মাহবুব, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার কীর্তিমান চাকমা, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক সৈয়দ আইনুল হুদা, বিআইজিআরএস চট্টগ্রামের এনফোর্সমেন্ট কোঅর্ডিনেটর কাজী হেলাল উদ্দিন, ট্রান্সপোর্ট কোঅর্ডিনেটর সুতপা তাসনিম, কমিউনিকেশন অফিসার মাহমুদুল হাসান।