১০ কিলোমিটার হেঁটে গিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২০
মোবাইলে চার্জ দেয়াকে কেন্দ্র করে ১০ কিলোমিটার রাস্তা পেরিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়েছে সিলেটের বর্ণি, কোম্পানীগঞ্জ ও কাঁঠালবাড়ি এলাকাবাসী। দুপুর ১২টার দিকে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে তিন গ্রামের মানুষ সংঘর্ষে জড়ালে রণক্ষেত্র পরিণত হয় থানা বাজার পয়েন্ট। এই সংঘর্ষে ৫ পুলিশ সদস্যসহ ২০ জন আহত হয়েছে।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে কোম্পানীগঞ্জ থানা সদর সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে এই ঘটনা ঘটে। দুপুর সোয়া ২টার দিকে পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছেন কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ আদনান।
জানা যায়, শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে বর্ণি গ্রামের এক ব্যক্তি মোবাইলে চার্জ দেয়া নিয়ে কাঠাঁলবাড়ী গ্রামের এক ব্যক্তির মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এ ঘটনায় একটি পক্ষ বর্ণি সড়কে গাড়ি আটকে রাখে। পরে থানা সদরে কোম্পানীগঞ্জ, বর্ণি ও কাঁঠালবাড়ী ৩ গ্রামের লোকজনের মধ্যে গ্রামবাসীর সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে আহত হয়েছেন উভয় পক্ষের অন্তত অর্ধশতাধিক লোক। এসময় বেশ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর, যানবাহন ও মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। পরে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
রাতে পরিস্থিতি শান্ত হলেও রোববার সকালে বর্ণি ও কোম্পানীগঞ্জ গ্রামের লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে কাঁঠালবাড়ি গ্রামের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। সকাল ১১টার দিকে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়েছে দুটি পক্ষ। দুপুর ১২টার দিকে কোম্পানীগঞ্জ থানা সদর সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের ব্রিজের এক পাশে কাঁঠালবাড়ি ও অন্যপাশে অবস্থান নেয় বর্ণি-কোম্পানীগঞ্জ গ্রামবাসী। তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্টা চালায় পুলিশ। কিন্তু ব্যর্থ হয় তারা। এক পর্যায়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তিন গ্রামের লোকজন। থানা বাজার পরিণত হয় রণক্ষেত্রে। উভয় পক্ষ ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে ৫-৬ পুলিশ সদস্যসহ আহত হন আরও অন্তত ২০ জন। দুপুর সোয়া দুইটার দিকে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে।
সংঘর্ষে দু’দিনে আহত হয়েছেন অন্তত ৭০ জন। তাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা.কামরুজ্জামান রাসেল।
এবিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ আদনান জানান, শনিবার বিকেলে মোবাইল চার্জ দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুজনের কথা কাটাকাটি হয়। পরে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। রোববার দুপুরে পুনরায় দুটি পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৩০ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। ইটপাটকেলের আঘাতে ৫-৬জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, সংঘর্ষ ঠেকাতে সিলেট জেলা পুলিশের অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার(ক্রাইম এন্ড অবস্) রফিকুল ইসলাম ও গোয়াইনঘাট সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সহিদুর রহমানের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।