২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বৈষম্যমুক্ত দেশ গড়তে এবং মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য বাস্তবায়ন ও শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠায় সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে আরও বেশি অবদান রাখার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে তিনি এ আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, লাখো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পরমতসহিষ্ণুতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, আসুন, ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে একটি বৈষম্যমুক্ত দেশ গড়তে এবং মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য বাস্তবায়ন ও শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠায় নিজ নিজ অবস্থান থেকে আরও বেশি অবদান রাখি। দেশ ও জাতিকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে আরও এগিয়ে নিয়ে যাই, গড়ে তুলি উন্নত-সমৃদ্ধ এক নতুন বাংলাদেশ- মহান বিজয় দিবসে এই আমার প্রত্যাশা।
তিনি বলেন, এ বছর জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে একটি বৈষম্যহীন ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন এ দেশের মানুষ দেখেছে তা অচিরেই বাস্তবায়িত হবে বলে আমি মনে করি। বীরের দেশ বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠা লাভ করবে-ইনশাআল্লাহ।
সবাইকে মহান বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ১৬ ডিসেম্বর, আমাদের মহান বিজয় দিবস। দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম ও নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে ১৯৭১ সালের এই দিনে আমরা অর্জন করেছি কাঙ্ক্ষিত বিজয়। আমরা পেয়েছি একটি সার্বভৌম দেশ, পবিত্ৰ সংবিধান, নিজস্ব মানচিত্র ও লাল-সবুজ পতাকা। পেয়েছি স্বাধীন জাতি হিসেবে বিশ্বের বুকে নিজেদের অস্তিত্ব আর মর্যাদা। বিজয়ের আনন্দঘন এ দিনে আমি দেশে ও প্রবাসে বসবাসরত সব বাংলাদেশিকে জানাই বিজয়ের শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন।
মহান মুক্তিযুদ্ধ ও ২০২৪ এর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শহীদদের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, বিজয়ের এই দিনে গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীর শহীদদের, যাদের সর্বোচ্চ ত্যাগে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতা। আমি কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করছি সব জাতীয় নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সম্ভ্রমহারা দুই লক্ষ মা-বোন, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক-সমর্থক, বিদেশি বন্ধু, যুদ্ধাহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যসহ সর্বস্তরের জনগণকে, যারা আমাদের বিজয় অর্জনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অবদান রেখেছেন। আমি আরও স্মরণ করি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের। জাতি তাদের অবদান শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, স্বাধীনতা বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন। তবে এ অর্জনের পেছনে রয়েছে দীর্ঘ শোষণ-বঞ্চনা, রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের করুণ ইতিহাস। ৫২ এর ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার যে স্বপ্নযাত্রা শুরু হয়েছিল, দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম ও নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণার মাধ্যমে তা পূর্ণতা পায়। দীর্ঘ নয় মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয় চূড়ান্ত বিজয়।
তিনি বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রধান লক্ষ্য ছিল রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি বাঙালির অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিত করা। সে লক্ষ্যকে সামনে রেখে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের অর্থনীতি ও অবকাঠামো পুনর্গঠনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রাম ও কৃষি বিপ্লবের শুরু হয়। কিন্তু বিজয়ের পাঁচ দশক পার হলেও জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি এখনো অর্জিত হয়নি। বার-বার আমাদের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ও অর্থনৈতিক মুক্তির পথচলা বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি কখনোই থেমে যায়নি। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়নসহ আর্থসামাজিক উন্নয়নের বিভিন্ন সূচকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বশান্তিতে বিশ্বাসী। যুদ্ধ কোনো দেশের জন্য কাঙ্ক্ষিত নয়। বাংলাদেশ মনে করে আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান সম্ভব। আন্তর্জাতিক সমস্যার মানবিক সমাধানে বাংলাদেশ সর্বদা আন্তরিক। ইসরায়েল কর্তৃক ফিলিস্তিন ও লেবাননের বিভিন্ন অঞ্চলে নিরীহ-নিরস্ত্র জনগণের ওপর বর্বরোচিত বোমা হামলার তীব্র নিন্দা জানায় বাংলাদেশ। ফিলিস্তিনি জনগণের যেকোনো ন্যায্য অধিকার আদায়ে বাংলাদেশ সবসময় তাদের পাশে থাকবে। বাংলাদেশে অবস্থানরত বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবর্তন এবং এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কার্যকর অবদান রাখবে- এই প্রত্যাশা করি।
প্রবাসীদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রবাসীদের অবদান অনস্বীকার্য। আমাদের প্রবাসী ভাইবোনেরা তাদের কষ্টার্জিত রেমিটেন্স দেশে পাঠানোর মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। জাতি তাদের অবদান কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করে। আমি আশা করি, বিশ্বমন্দা ও অর্থনীতির এই ক্রান্তিকালে প্রবাসীগণ রেমিটেন্স পাঠানো অব্যাহত রাখবেন এবং দেশের উন্নয়নে ইতিবাচক অবদান রাখবেন।
বাঙালি জাতির গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সারাদেশের ন্যায় রংপুরেও বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে রাতের প্রথম প্রহরেই শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ শুরু হয়েছে।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) বারোটা এক মিনিটে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরির মাঠে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন সাংবাদিক সংগঠন প্রেস ক্লাব রংপুর,রিপোর্টার্স ক্লাস,রংপুর, রাজনৈতিক দল,ও মুক্তি চেতনা মানুষজন। সুষ্ঠু ও শৃঙ্খলা বজায় রেখে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জেলা ও উপজেলায় একত্রিশবার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের সূচনা হবে। বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, রেঞ্জ ডিআইজি,পুলিশ কমিশনারসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে বিজয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতা।
এ উপলক্ষে রংপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেয়া হয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সার্বক্ষণিক তদারকিতে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
নেত্রকোনার দুর্গাপুরের সোমেশ্বরী নদীর উপর অস্থায়ী কাঠের ব্রিজের উদ্বোধন হয়েছে।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) সোমেশ্বরী নদীর শিবগঞ্জ অংশে দোয়া মাহফিল মধ্য দিয়ে কাঠের ব্রিজ উদ্বোধন হয়।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে যাত্রীদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতেই ১৫ এবং ১৬ ডিসেম্বর সকল প্রকার যানবাহন চলাচলেও কোন ইজারা টোল নেয়া হবে না বলেও জানান ব্রিজ পরিচালনাকারীরা।
স্থানীয়রা জানান, সোমেশ্বরী নদীতে কোন স্থায়ী ব্রীজ না থাকায় উপজেলা দুইটি ইউনিয়ন ও পৌরসভার প্রায় অর্ধলাখ মানুষ বছরের প্রায় ছয় মাসের বেশি সময় পাহাড়ি খরস্রতার সোমেশ্বরী নদীতে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হয়। তবে শুকনো মৌসুমে নদীতে পানি কমে যাওয়ায় পারাপারে দুর্ভোগ বাড়ে।
গেল কয়েক বছর ধরে এই দুর্ভোগ লাঘবে সোমেশ্বরী উপর কাঠের বীজ নির্মাণ করে আসছে। তবে চলতি বছর সোমেশ্বরী নদী চৈতাটি, বিরিশিরি ও শিবগঞ্জ অংশে বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামালের অর্থায়নে ও স্থানীয় নেতাকর্মীদের স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে তিনটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়।
ব্রিজগুলো দিয়ে যাত্রীদের জন্য বিনামূল্যে ও ছোট যানবাহনের জন্য নাম মাত্র টোল নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানান পরিচালনাকারীরা।
তাছাড়াও পর্যটন সম্ভবও এলাকা হয় নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত হাজারো পর্যটক উপজেলার সাদামাটির পাহাড়, রানীখং, বিজয়পুর সহ আশ পাশের পর্যটন স্পটগুলোতে ভিড় করেন। এ সময় গাড়ি রেখে অন্য কোন মাধ্যমে যেতে হলেও ব্রিজগুলো নির্মাণ হওয়ায় সরাসরি গাড়ি নিয়ে পর্যটন স্পটগুলো ঘুরে দেখার সুবিধা হয়েছে বলেও জানান পর্যটকরা।
কাঠের এই অস্থায়ী তিনটি ব্রিজ নির্মাণের অন্তত ২০ লাখ টাকার উপরে খরচ হয়েছে। তবে ব্রিজগুলো থেকে আয়ের পুরোটাই স্থানীয় মসজিদ মন্দিরে উন্নয়ন কাজে ব্যয় করা হবে জানান স্থানীয় নেতাকর্মী।
আজ ১৬ ডিসেম্বর, বিজয়ের দিন। বাঙালি জাতির হাজার বছরের শৌর্যবীর্য এবং বীরত্বের এক অবিস্মরণীয় দিন। এই দিনটি বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশের দিন। পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে স্বাধীন ভূখণ্ডের অস্তিত্ব জানান দেওয়ার দিন।
দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ শেষে ১৯৭১ সালের এই দিনে বাঙালি জাতি স্বাধীনতা সংগ্রামের চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করেছিল। আজকের দিনটিতে বিজয়ের উল্লাসে ভাসবে পুরো দেশ, আনন্দে উদ্বেলিত হবে পুরো জাতি। দেশের প্রতিটি প্রান্তে নানা আয়োজনে উদযাপন হবে মহান বিজয় দিবস।
পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণ এবং বাংলাদেশ বিশ্ব মানচিত্রে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার মুহূর্তকে স্মরণ করে বিজয় দিবস উদযাপন শুরু হবে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে। বিজয় দিবস উপলক্ষে সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধের শহিদ স্মৃতিস্তম্ভে প্রথমে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং এরপর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।
এরপর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে স্মৃতিসৌধ পুষ্পস্তবক অর্পণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।
সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ সারাদেশে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনাসমূহ আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হবে।
আলোচনা সভা এবং মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের মধ্য দিয়ে মহান বিজয় দিবসের কর্মসূচি পালন করা হবে। সরকারি ছুটির দিন।
দিবসটি উপলক্ষে বিএনপিসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ পৃথক বাণী দিয়েছেন। তারা মুক্তিযুদ্ধের শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন এবং নিহতদের রুহের মাগফেরাত কামনা করবেন।
বিজয় দিবসের প্রাক্কালে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানান এবং মুক্তিযুদ্ধে শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পরমতসহিষ্ণুতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। তাই আসুন, ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে একটি বৈষম্যমুক্ত দেশ গড়তে এবং মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য বাস্তাবায়ন ও শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠায় নিজ নিজ অবস্থান থেকে আরও বেশি অবদান রাখি। দেশ ও জাতিকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে আরো এগিয়ে নিয়ে যাই, গড়ে তুলি উন্নত-সমৃদ্ধ এক নতুন বাংলাদেশ- মহান বিজয় দিবসে এই আমার প্রত্যাশা।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘এ বছর জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে একটি বৈষম্যহীন ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন এ দেশের মানুষ দেখেছে, তা অচিরেই বাস্তবায়িত হবে বলে আমি মনে করি। বীরের দেশ বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠা লাভ করবে-ইনশাআল্লাহ।’
তিনি বলেন, ‘বিজয়ের এই দিনে আমি গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীর শহিদদের, যাঁদের সর্বোচ্চ ত্যাগে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতা। আমি কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করছি সকল জাতীয় নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সম্ভ্রমহারা দুই লাখ মা-বোন, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক-সমর্থক, বিদেশি বন্ধু, যুদ্ধাহত ও শহিদ পরিবারের সদস্যসহ সর্বস্তরের জনগণকে, যাঁরা আমাদের বিজয় অর্জনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অবদান রেখেছেন। আমি আরো স্মরণ করি, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যাঁরা শহিদ হয়েছেন তাদেরকে। জাতি তাঁদের অবদান শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে।’
প্রধান উপদেষ্টা তাঁর বাণীতে বলেন, ‘আজকের এই দিনে, আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের বীর শহিদদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি এবং তাদের আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান জানাই। ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার একটি উন্নত, সমৃদ্ধ এবং সুশাসিত বাংলাদেশ গঠনে সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করছে।’
বিজয় দিবসের প্রাক্কালে দেয়া এই বাণীতে তিনি বলেন, দেশকে আরও উন্নত ও শক্তিশালী করতে এবং স্বাধীনতার পূর্ণ সুফল ভোগ করতে আমরা বদ্ধপরিকর। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বিজয় দিবস কেবল আমাদের গর্বের উৎস নয়, এটি আমাদের শপথের দিনও। শপথ আমাদের একতাবদ্ধ থাকার, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করার।’
বিজয় দিবসকে বাংলাদেশের ইতিহাসে অত্যন্ত গৌরবময় ও স্মরণীয় দিন হিসেবে উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মাধ্যমে আমরা অর্জন করি স্বাধীনতার স্বাদ এবং জাতি হিসেবে নিজস্ব পরিচিতি। প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, ‘লাখ লাখ শহিদের রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি আমাদের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা।’ প্রধান উপদেষ্টা ‘বিজয় দিবস ২০২৪’-এর সর্বাঙ্গীণ সাফল্য কামনা করেন।
মহান বিজয় দিবস-২০২৪ উপলক্ষে ৩২ জন জুনিয়র কমিশনপ্রাপ্ত অফিসারকে সম্মানসূচক কমিশন দিয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মাস্টার চিফ পেটি অফিসার (এমসিপিও) পদমর্যাদার জুনিয়র কমিশনড অফিসারদের অনারারি সাব-লেফটেন্যান্ট পদে পদোন্নতি দেওয়া হবে।