যেকোন সময় নির্বাচন আয়োজনে প্রস্তুত আছে কমিশন বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে গণমাধ্যমের সাঙ্গে আলাপকালে তিনি কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, মোটাদাগে বলা যায়, ২০২৫ সালের শেষ দিক থেকে ২০২৬ সালের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করা যায়।
প্রধান উপদেষ্টার এই বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, যেকোন সময় নির্বাচন আয়োজনে প্রস্তুত আছে কমিশন।
বিজ্ঞাপন
এর আগে, ১৫ ডিসেম্বর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের আর কত মাস প্রয়োজন, তা জনগণের জানার অধিকার আছে। আগামী দিনের কর্মপরিকল্পনার রোডম্যাপ ঘোষণার কথা শুনলেই যদি উপদেষ্টাদের চেহারায় অস্বস্তির ছাপ ফুটে ওঠে, সেটি অবশ্যই গণ-আকাঙ্ক্ষাবিরোধী হবে।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে গতকাল বিএনপির এক আলোচনা সভায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান এ কথা বলেন।
স্পিরিটস অব জুলাই কনসার্ট ঘিরে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোল নেবে না কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া বিভাগের ডিসি মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, আগামী ২১ ডিসেম্বর 'স্পিরিটস অব জুলাই কনসার্ট' উপলক্ষে দুপুর ২টা হতে রাত ১১টা পর্যন্ত টোল ব্যতীত এয়ারপোর্ট, কুড়িল ও বনানী র্যাম্প দিয়ে এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করা যাবে।
জুলাই-আগস্ট গণ–অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারকে সহায়তার জন্য ‘ইকোস অব রেভল্যুশন’ শীর্ষক কনসার্টে গাইবেন জনপ্রিয় পাকিস্তানি সংগীতশিল্পী রাহাত ফতেহ আলী খান। ২১ ডিসেম্বর রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে কনসার্টটি আয়োজন করছে ‘স্পিরিটস অব জুলাই’ প্ল্যাটফর্ম। ইতিমধ্যে কনসার্টের টিকিট বিক্রি শুরু করেছেন আয়োজকেরা।
এই কনসার্ট থেকে আয় হওয়া সব অর্থ শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের পরিবার নিয়ে কাজ করা কল্যাণমূলক সংস্থা ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’-এ দেওয়া হবে।
জুলাই বিপ্লবে শিক্ষার্থীদের ভূমিকার কারণে তাদের প্রতি সম্মান রেখে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের প্রথম প্রহর থেকে টিকিট কেনায় শিক্ষার্থীদের জন্য ১৬ থেকে ৩৬ শতাংশ পর্যন্ত বিশেষ ছাড় দিচ্ছেন আয়োজকেরা।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মোট তিনটি ক্যাটাগরিতে এ কনসার্টের টিকিট বিক্রি হচ্ছে। প্রথমত, ‘ভিআইপি’ টিকিটের মূল্য ১০ হাজার টাকা। এ টিকিট ক্রেতারা মঞ্চের সামনে বসে অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে ১৬ ডিসেম্বর ‘বিজয় দিবস’ স্মরণে শিক্ষার্থীদের জন্য ১৬ শতাংশ ডিসকাউন্ট (ছাড়সহ ৮ হাজার ৪০০ টাকা) দেওয়া হয়।
দ্বিতীয়ত, ‘ফ্রন্ট রো’ টিকিটের মূল্য ৪ হাজার ৫০০ টাকা। এ টিকিট ক্রেতারা সামনের সারি থেকে কনসার্ট উপভোগ করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে গণ–অভ্যুত্থানের বছর ‘২০২৪ সাল’ স্মরণে শিক্ষার্থীদের জন্য ২৪ শতাংশ ডিসকাউন্ট (ছাড়সহ ৩ হাজার ৪২০ টাকা) দেওয়া হয়েছে। তৃতীয়ত, ‘জেনারেল’ টিকিটের মূল্য ২ হাজার ৫০০ টাকা। এ টিকিট ক্রেতারা পেছনের সারি থেকে কনসার্ট উপভোগ করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে ‘৩৬ জুলাই’ স্মরণে শিক্ষার্থীদের জন্য ৩৬ শতাংশ ডিসকাউন্ট (ছাড়সহ ১ হাজার ৬০০ টাকা) প্রদান করা হচ্ছে।
টিকিট কেনার সময় শিক্ষার্থীদের নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া ই–মেইল অ্যাড্রেস ব্যবহার করতে হবে (যেসব শিক্ষার্থীর এ ই–মেইল নেই, তারা অন্যদের সহযোগিতায় টিকিট কাটতে পারবেন)। রাজধানী ঢাকার পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ১৬ ডিসেম্বর থেকে বুথ বসানো হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতেও একটি বুথ বসানো হয়। এসব বুথ থেকে সহযোগিতা নিয়ে অথবা নিজেরাই অনলাইনে টিকিট কাটতে পারবেন শিক্ষার্থীরা।
লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে প্রায় দ্বিগুণ অর্জনের মধ্যদিয়ে পরিসমাপ্তি হলো শেভরন বাংলাদেশের উদ্যোক্তা প্রকল্প। উদ্যোক্তারা তাদের সাফল্যগাঁথা বর্ণনা দিয়ে বিমোহিত করলেন অতিথি ও দর্শকদের।
‘টেকসই উন্নয়নের যাত্রায় উদ্যোক্তার ক্ষমতায়ন’ এর লক্ষ্যে পরিচালিত হয় উদ্যোক্তা প্রকল্প। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে দীর্ঘ ৪ বছরের সফল যাত্রার সমাপনী আয়োজন করা হয়।
প্রকল্পের লক্ষ্য ছিল ১১০টি ভিডিও (গ্রাম উন্নয়ন সংগঠন) সমবায় সমিতি, ১ হাজার ক্ষুদ্র, ছোট এবং মাঝারি উদ্যোগের (এমএসএমই) মাধ্যমে অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি, তাদের মূলধন সংরক্ষণ ও বৃদ্ধি করা। ২০২০ সাল থেকে প্রকল্পটি সিলেট এবং হবিগঞ্জের শেভরন বাংলাদেশের গ্যাস ক্ষেত্র এলাকায় সক্রিয় ছিল। এর মাধ্যমে প্রায় ৪২ হাজার ৫০০ মানুষ ক্ষমতায়ন এবং সামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে উপকৃত হয়েছেন। তাদের আর্থিক প্রবৃদ্ধি ৩৫ শতাংশ বাড়ানোর লক্ষ্য থাকলেও ৪ বছর শেষে ৫৪ শতাংশ অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে বলে জানানো হয় অনুষ্ঠানে।
অনুষ্ঠানে ভিডিও ডকুমেন্টারির মাধ্যমে কয়েকজনের এবং আবার কয়েকজন উদ্যোক্তা স্বশরীরে হাজির হয়ে তাদের সাফল্যগাঁথা তুলে ধরেন। কেউ গরু পালন করে, কেউ কোয়েল পাখি পালন করে, কেউ হাস পালন করে, আবার কেউ কম্পোস্ট সার উৎপাদন করে নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছেন। যারা অনেকে করোনা মহামারির সময় সব হারিয়ে নিঃস্ব হতে বসেছিলেন।
প্রকল্পের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় উল্টো দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছেন ভাগ্যের চাকা। সমাজের সুবিধাবঞ্চিত এসব নারী আগে অন্যের উপর নির্ভরশীল ছিলেন, এখন নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে অন্যদের পাশে দাঁড়াতে শুরু করেছেন। এতে করে তাদের সামাজিক মর্যাদাও অনেকগুণ বেড়েছে বলে জানালেন রীনা গোমেজ।
উদ্যোক্তা-এম্পাওয়ারিং এন্টারপ্রেনারস প্রকল্পটি শেভরন বাংলাদেশ দ্বারা অর্থায়িত এবং আইডিই দ্বারা বাস্তবায়ন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, স্মল ইজ ভার্নারেবল (ক্ষুদ্র ঝুঁকিপূর্ণ)। বড় উদ্যোক্তারা তাদের বাজারে ঢুকতে দেয় না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাজার ব্যবস্থাপনাও তাদের বিরুদ্ধে কাজ করে।
তিনি বলেন, এনজিও কাজের দুর্বল দিক হচ্ছে, যতোক্ষণ প্রকল্প ততোক্ষণ জীবন্ত, পরে হারিয়ে যায়। এমনভাবে উদ্যোক্তা তৈরি করতে হবে, তারা যেনো হারিয়ে না যায়। তাদেরকে এমনভাবে সক্ষম করে তুলতে হবে, যাতে পরে আর আপনার ভূমিকার প্রয়োজন না হয়। তাদেরকে সরকারের বিভিন্ন ধরণের সুযোগ সুবিধার সঙ্গে পরিচিত করতে হবে। তাদেরকে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মধ্যে নিতে না পারলে সাফল্য আসবে না।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য উদ্যোক্তা প্রকল্পের প্রশংসা করে বলেন, প্রকল্পের চিন্তা সঠিক ছিল বলে মনে হয়েছে। প্রকল্প কার্যকর বলে মনে করি।
বিশেষ অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শেভরন বাংলাদেশের ডিরেক্টর (ফাইনান্স) গ্রেগ বার্নস, ডিরেক্টর (কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স) মুহাম্মদ ইমরুল কবির, মৎস্য বিভাগের উপপরিচালক (প্রশিক্ষণ) ফিরোজ আহমেদ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক (পরিকল্পনা)-আইসিটি উইং ড. এফএম মাহবুবুর রহমান, প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের প্রিন্সিপ্যাল বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. হোসনে আরা বেগম।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আইডিই বাংলাদেশের কান্ট্রিডিরেক্টর সামীর কার্কি। আইডিই বাংলাদেশের মনিটরিং ও ইভ্যালুয়েশন বিশেষজ্ঞ পারমিতা দত্তের সঞ্চালনায় আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে ছিলেন শেভরন বাংলাদেশের সিই এবং এসআই ম্যানেজার একেএম আরিফ আখতার, ফিল্ড কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স ম্যানেজার খন্দকার তুষারুজ্জামান, আলিম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক মোঃ হুমায়ূন কবীর, আইডিই বাংলাদেশের সহযোগী পরিচালক (প্রোগ্রাম) মোহাম্মদ শোয়েব ইফতেখার, হেড অব স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ মোঃ আফজাল হোসেন ভূঁইয়া, উদ্যোক্তা প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মো. হান্নান আলী ।
শেভরন বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় সমন্বিত জ্বালানি কোম্পানি, জ্বালানি শিল্পের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই যান পদচারনা রয়েছে। শেভরন বাংলাদেশ ব্লক টুয়েলভ, লিমিটেড এবং ব্লকস থার্টিন ও ফোরটিন, লিমিটেড (শেভরন বাংলাদেশ) নিয়ে বাংলাদেশের বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদক। দেশিয় প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদনের প্রায় ৬০ শতাংশ এবং দেশিয় কনডেনসেট উৎপাদনের ৮৩ শতাংশ যোগান দিয়ে যাচ্ছে। শেভরন বাংলাদেশ তার গ্যাসক্ষেত্র এলাকার শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনৈতিক ও পরিবেশ উন্নয়নে ভূমিকা পালন করে আসছে। অন্যদিকে আইডিই একটি আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা যা নিম্ন আয়ের মানুষদের অর্থনৈতিক এবং সামাজিকভাবে ক্ষমতায়ন করতে কাজ করে যাতে তারা বহুবিধ প্রতিকূলতা অতিক্রম করতে পারে। আইডিই ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশে তার প্রথম কান্ট্রি প্রোগ্রাম হিসাবে যাত্রা শুরু করে।
ফরিদপুর ও কুমিল্লাকে প্রশাসনিক বিভাগ করার সুপারিশ করা হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্য সচিব ড. মো. মোখলেছ উর রহমান।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ তথ্য জানান।
বর্তমানে বাংলাদেশে আটটি প্রশাসনিক বিভাগ আছে। পার্শ্ববর্তী জেলার কিছু অংশও প্রস্তাবিত ফরিদপুর ও কুমিল্লা বিভাগের সঙ্গে একীভূত হতে পারে।
ড. মো. মোখলেছ উর রহমান বলেন, সারাদেশের মানচিত্র পর্যালোচনা করে আমরা ফরিদপুর ও কুমিল্লাকে বিভাগ করার সুপারিশ করতে একমত হয়েছি। সরকার ইচ্ছা করলে এই সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে পারে।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এই দুই জেলাকে দুই বিভাগ করার উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। গত নভেম্বরে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই নতুন বিভাগ সৃষ্টির প্রস্তাব আবার উত্থাপিত হলেও অর্থনৈতিক মন্দার কারণে তা বাস্তবায়ন হয়নি।
তিনি বলেন, কমিশন শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডারের বর্তমান কাঠামো বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তা দেখছে না। পরিবর্তে গুরুত্বপূর্ণ এই দুই খাত পরিচালনার জন্য পৃথক সংস্থা গঠনের প্রস্তাব দেবে কমিশন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনগণের জন্য দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খাত। কমিশন এই খাতগুলোতে কর্মরত পেশাদারদের জন্য বিশেষ সুবিধা বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করছে, তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সরকারের ওপর নির্ভর করবে।
সরকারের ই-সিগারেট ও ইলেকট্রনিক নিকোটিন ডেলিভারি সিস্টেম (ইএনডিএস) আমদানি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক নিকোটিন ডেলিভারি সিস্টেম ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন (বেন্ডস্টা)। এই সিদ্ধান্তের আওতায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আমদানি নীতি আদেশে আমদানিনিষিদ্ধ পণ্যের তালিকায় ই-সিগারেট বা ইএনডিএসকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এতে প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপায়ীদের জন্য প্রমাণিত কম ক্ষতিকর একটি বিকল্প বেছে নেওয়ার পথ বন্ধ হতে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করছে বেন্ডস্টা।
আন্তর্জাতিক গবেষণার তথ্য তুলে ধরে বেন্ডস্টা জানায়, ইউকে হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সি ও অফিস ফর হেলথ ইমপ্রুভমেন্ট অ্যান্ড ডিসপারিটিস-এর এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ভেপিং বা ই-সিগারেট প্রচলিত সিগারেটের তুলনায় ৯৫ শতাংশ কম ক্ষতিকর। সংগঠনটি বলছে, এ ধরনের নিষেধাজ্ঞার ফলে বর্তমানে যারা ই-সিগারেট ব্যবহার করছেন, তারা আবার প্রচলিত সিগারেটের দিকে ঝুঁকতে পারেন। এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য আরও বড় ঝুঁকি তৈরি করবে।
বেন্ডস্টা বলছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতায় প্রমাণিত হয়েছে যে, ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করলেই এর ব্যবহার বন্ধ হয় না। বরং আইনসম্মত পথ বন্ধ করলে গড়ে ওঠে কালো বাজার। ভারতে ২০১৯ সালে ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করার পর অবৈধভাবে এই পণ্য বিক্রির পরিমাণ ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। ফলে পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণের সুযোগ ও জবাবদিহিতা না থাকায় ব্যবহারকারীরা ঝুঁকির মুখে পড়েন। নিম্নমানের পণ্য ছড়িয়ে পড়ায় দেশটির জনস্বাস্থ্য লক্ষ্যমাত্রা ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়।
২০২৩ সালে আন্তর্জাতিক গবেষণা জার্নাল প্রিভেন্টিভ মেডিসিন রিপোর্টস-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় উঠে এসেছে, ভারত সরকারের কঠোর নিষেধাজ্ঞার পরও ই-সিগারেট তরুণদের জন্য সহজলভ্য রয়ে গেছে। এতে স্পষ্ট হয় যে কালো বাজারে নিষিদ্ধ পণ্যেরও বেচাকেনা অবাধে চলতে থাকে। ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, এই অনিয়ন্ত্রিত ব্যবসা ব্যবহারকারীদের ঝুঁকির মুখে ফেলেছে এবং সরকারও হারিয়েছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব।
সংগঠনটি জানায়, কেবল নিষিদ্ধ ঘোষণা করেই কোনো পণ্যের ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব নয়। বরং এতে নকল ও নিম্নমানের পণ্য ছড়িয়ে পড়ার মতো নতুন সমস্যা তৈরি হয়। বেন্ডস্টা সরকারকে প্রমাণভিত্তিক ও বাস্তবসম্মত নীতি গ্রহণের আহ্বান জানায়, যা তামাকজনিত ক্ষতি হ্রাসে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
বেন্ডস্টার বিশ্বাস, ই-সিগারেটের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞার পরিবর্তে বৈজ্ঞানিক ও যুক্তিসংগত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা প্রয়োজন। এর মাধ্যমে একদিকে জনস্বাস্থ্য লক্ষ্য অর্জন করা যাবে, অন্যদিকে প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপায়ীদের জন্য নিরাপদ বিকল্প নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। সংগঠনটি একটি সুষ্ঠু নিয়ন্ত্রক কাঠামো তৈরি করতে সরকার ও অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। ধূমপান রোধে বিভিন্ন দেশে প্রমাণিত তামাকের ক্ষতিহ্রাস কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।