যে কারণে অঞ্জু বললেন, ‘হাতি মরলেও লাখ টাকা’
ঢালিউডের ইতিহাসে ‘বেদের মেয়ে জোসনা’কে বলা হয় সর্বকালের সবচেয়ে ব্যবসাসফল চলচ্চিত্র। এই ছবিটির কথা এলেই যার চেহারাটি চোখের সামনে ভেসে ওঠে তিনি অঞ্জু ঘোষ। এই সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্রে অনবদ্য অভিনয়ের মধ্য দিয়ে সে সময় দুই বাংলায় জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছেছিলেন তিনি। একটা সময় তুমুল ব্যস্ত সময় পার করা এই নায়িকা দীর্ঘ সময় ধরে কলকাতায় বসবাস করছেন। অনেক আগেই সিনেমাকে ইতি জানিয়েছিলেন।
তবে মাঝে দেশে এসেছিলেন। ঘুরে গিয়েছেন এফডিসি। তখন শোনা গিয়েছিল আবারও সিনেমায় সরব হবেন অঞ্জু ঘোষ। তবে অনেকটা বছর পেরিয়ে গেলেও তাকে আর পাওয়া যায়নি। গণমাধ্যমেও সেভাবে তাকে কথা বলতে দেখা যায় না।
এবার জানা গেল, নতুন সিনেমা নির্মাণ করতে যাচ্ছেন অঞ্জু ঘোষ। আপাতত চলছে গল্প ও চিত্রনাট্যের কাজ। সম্প্রতি দেশীয় এক গণমাধ্যমে এমনটাই জানালেন নায়িকা। তিনি বলেন, ‘একটি পরিপূর্ণ সিনেমাই বানাবো আমরা। দর্শক আমার এই সিনেমায় সুখ-দুঃখ-আনন্দ-বেদনা সবকিছুই দেখতে পাবেন।’
নতুন বছরে সিনেমাটির নির্মাণ কাজ শুরু করতে চান তিনি। এখন সেই প্রক্রিয়াই চলছে। সেই সঙ্গে জানালেন এতে মুম্বাইয়ের অভিনয়শিল্পীরা কাজ করবেন। নিজের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে অঞ্জু ঘোষ বলেন, কলকাতায় আমি বেশ ভালো আছি, শান্তিতে আছি। কাজ নিয়ে ব্যস্ত হচ্ছি। এটাই আমার জন্য বড় পাওয়া।
তবে মাঝে-মধ্যে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন তিনি। বিশেষ করে ইউটিউব চ্যানেলগুলোতে তাকে নিয়ে মিথ্যা-বানোয়াট খবর প্রকাশ করা হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
অঞ্জু বলেন, ‘যারা এসব মিথ্যাচার করছেন তাদের জানাতে চাই, অভিনয় করে আমি যে অর্থ, সম্মান অর্জন করেছি তাতে ভগবানের কৃপায় আমার পরের সাত প্রজন্ম চলে যেতে পারবে। যারা আমার অবস্থান নিয়ে মিথ্যাচার করছে তাদের জানাতে চাই, বর্তমানে আমি যে সল্টলেকের বাড়িতে থাকি তার বাজারমূল্য তারা অনুমান করতে পারবেন না। বাংলায় একটি প্রবাদ আছে- হাতি মরলেও লাখ টাকা। আর অঞ্জু ঘোষ হাজার বছরে একজনই জন্মায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘একমাত্র আমি ১৬ বছর বয়সে তিন তিনবার তাসখন্দ আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সম্মানিত হয়েছি; যা একজন অভিনেত্রীর জন্য রেকর্ড। আমাকে নিয়ে বরেণ্য চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায় আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন সিনেমা করার। এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কী হতে পারে।’
১৯৮২ সালে এফ, কবীর চৌধুরী পরিচালিত ‘সওদাগর’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে অঞ্জু ঘোষের। ছবিটি ব্যবসায়িকভাবে সফল ছিল। ১৯৮৬ সালে ক্যারিয়ার বিপর্যয়ের মুখে পড়লেও তিনি ভালোভাবেই ফিরে আসেন। ১৯৮৭ সালে অঞ্জু সর্বাধিক ১৪টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। এর পরের বছর অর্থাৎ ১৯৮৯ সালে অঞ্জু অভিনীত ‘বেদের মেয়ে জোসনা’ রেকর্ড পরিমাণ ব্যবসা করে। চলচ্চিত্রটির মাধ্যমে অঞ্জু ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। তিনি মোট ৩০০টিরও বেশি সিনেমায় অভিনয় করেন।